* আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আবারো ভূমিকম্প হওয়ার আশংকা করছে বিশেষজ্ঞরা । ১৮ ই সেপ্টেম্বার সন্ধ্যা ৬ টা ৪২ মিনিটের দিকে বেশ প্রবল দুলুনি অনুভূত হয় । প্রায় ২ মিনিটের উপর সময় ধরে চলে এই ভূমিকম্প । ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সহ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, মানিকগঞ্জ, নাটোর, কুষ্টিয়া, বগুড়া, গাইবান্ধা, সিলেট, রাজশাহী সহ ৩২ টি স্থানে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয় । আমেরিকার ভূতাত্ত্বিক জরিপ প্রতিষ্ঠান USGS জানিয়েছে ঢাকা থেকে ৫০০ কিঃ মিঃ দূরে উত্তর-পুর্বে নেপাল সিমান্তের কাছে ভারতের সিকিম রাজ্যের রাজধানি গ্যাংটক থেকে ৬৪ কিঃ মিঃ উত্তর-পশ্চিমে প্রায় আড়াই মিনিট ধরে রিখটার স্কেলে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয় । ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল সিকিমে মারাত্নক বিপর্যয়ের আশংকা করা হচ্ছে । অনেকেই বলছে এই ভূমিকম্প আগের চেয়ে মারাত্নক ছিল । ঢাকায় এ ধরনের উঁচু মাত্রার ভূমিকম্প এই প্রথম । মানুষ আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় নেমে আসে ।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে ঝিগাতলার একটি ১১ তলা ভবনে ও বৈশাখী টেলিভিশন ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে । লোকজন আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে । এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দ্রুত বিল্ডিং থেকে নামতে গিয়ে ৫ জন আহত হয়েছে । বগুড়ায় দেয়াল ধসে একজন মহিলা আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে । এছাড়া অনেক স্থানে জানালার কাঁচ ভেঙ্গে পড়ার খবর পাওয়া গেছে । তবে ঢাকাতে বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া জায়নি । ভারতে ৩০ জন আহত এবং ১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে ।
দেশে সাত মাত্রার ভূমিকম্পে কি ধরনের ক্ষতি হবে ?
এই মূহুর্তে বড় ধরনের ভূমিকম্পে বাংলাদেশের পক্ষে ক্ষতি এড়ানোর কোন পথ নেই । এটি হচ্ছে বাস্তব সত্য । বিশেষ করে চিকিৎসা ও উদ্ধার কাজের জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল ও টেকনোলজি না থাকায় প্রচুর প্রাণহানি ঘটবে । শুধুমাত্র ঢাকাতেই ক্ষতিগ্রস্থদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার মত পর্যাপ্ত সেবাকেন্দ্র নেই । যা আছে তাতে যথেষ্ট ঔষধ ও লোকবল নেই । সাত মাত্রার ভূমিকম্প হলেই শহরের প্রায় ৩৫ শতাংশ এবং পুরান ঢাকার প্রায় ৯০ শতাংশ ভবন মুহুর্তেই ধসে পড়বে । ১২৫ বছর আগে এই মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল । এরপর আর কোন বড় ধরনের ভূমিকম্প না হওয়ায় ভুগর্ভস্থ প্লেটে ইতিমধ্যে যে যথেষ্ট শক্তি সঞ্চিত হয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই । এখন থেকেই প্রস্ততি না নিলে বিপর্যয়ে ক্ষয়ক্ষতি কমানো অসম্ভব হয়ে পড়বে । বুয়েটের শিক্ষক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ডঃ জি এম আনসারিও একই কথা বলেছেন । রাজউক সিটি কর্পরেশন একে অপরের উপর দায় চাপাচ্ছে । ফলাফলে কাজ এগুচ্ছে অত্যন্ত ধীর গতিতে । তারা চিন্তা করতে করতেই সময় শেষ । এ অঞ্চলে শেষ ভূমিকম্প হয়েছিল ১৮৮৫ সালে মধুপুরে । ফলে আরেকটি বড় ভূমিকম্প হওয়ার মত শক্তি ইতিমধ্যেই সঞ্চিত হয়েছে । তাই এখন থেকেই প্রস্ততি নেয়া খুবই জরুরী । আমাদের দেশে প্রধান মন্ত্রী হাত না দেয়া পর্যন্ত কোন কাজই ঠিক মত এগোয় না । আমাদের প্রত্যাশা থাকবে এই বিপর্যয় রোধে প্রধান মন্ত্রী নিশ্চয়ই তিনি তার হাত জনগণের দিকে বাড়িয়ে দিবেন অরাজনৈতিকভাবে মানবকল্যাণে ।
সর্বশেষ সংবাদঃ
* ভারতে ১৮ ও নেপালে ৫ জনের মৃত্যু । সরকারিভাবে ৯ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে ।
* সূত্রাপুরে ৫ তলা ভবন ৪ তলা ভবনের উপর হেলে পড়েছে । কেউ হতাহত হয়নি ।
* জয়পুরহাটে দেয়াল ধসে শিশুসহ ৪ জন আহত ।
* বাংলাদেশ ভূমিকম্প, সুনামি ও সাইক্লোনের জন্য ঝুকিপুর্ণ দেশগুলোর মধ্যে ৬ষ্ঠ অবস্থানে আছে ।
* ঢাকায় স্বেচ্ছাসেবক গঠন করা হচ্ছে ।
* ৫০০ কিঃ মিঃ দূরে এত প্রবল ভূকম্পনের জন্য বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে ।
* আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আবারো ভূমিকম্প হওয়ার আশংকা করছে বিশেষজ্ঞরা ।
* ভারতের সিকিমে বিদ্যুত, টেলিফোন, মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ।
* নেপালে ব্রিটিশ ভবন ধসে ১ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছে ।
* নেপাল ও ভারতে মৃতের সংখ্যা ৫৪ তে দাড়িয়েছে ।