আমরা বাংলাদেশী । আমাদের দেশে যৌথ পরিবারের সংখ্যাই বেশি । বাবা-মা, ভাই-বন, চাচা-চাচি, খালা-খালু, শালা-শালি এবং বিভিন্ন বয়সের বাচ্চা-কাচ্চা সহ আমরা একসাথে থাকি । ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, মন কষাকষি ছাড়াও নানান ঝামেলা যৌথ পরিবারের নিয়মিত ব্যাপার । তারপরও বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও প্রায় সব দেশেই কিছু না কিছু যৌথ পরিবার দেখা যায় । যৌথ পরিবারে সুবিধা অসুবিধা দুই আছে । কথায় আছে “একতাই বল।” এলাকাতে কোন যৌথ পরিবার থাকলে এবং তাদের মধ্যে যদি একতা বজায় থাকে, তবে সে পরিবারকে বাইরের কেউ সহজে ঘাটায় না । ঐ পরিবারের কেউ যদি বড় কিছু করে তবে অন্যদের মধ্যেও তা ছড়িয়ে পড়ে বা করার চেষ্টা থাকে । সবাই অন্যকে দেখেই শেখে । কাছের কেউ হলে শেখাটা সহজ এবং মজবুত হয় । আর তা যৌথ পরিবারেই সহজ হয় ।
যৌথ পরিবারে সবার মধ্যেই পজিটিভ গুণগুলো বেশি দেখা যায় । যেমন পরিবারের একজনের সাথে অন্যজনের কথা কাটাকাটি হল । ফলসরূপ কথা বন্ধ , কান্নাকাটি করে বুক ভাসানো বা চিৎকার করে প্রলাপ বকা বা গালাগালি ইত্যাদি ইত্যাদি । তখন সাথে সাথেই পরিবারে দুটি দল তৈরি হয়ে যায় । এক দল একজনের পক্ষে অন্যদল অন্যজনের পক্ষে । আবার দুই দলেরও লিডার থাকে যারা বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় তুলে ধরে এবং তাদের দলের ক্ষুদে সদস্যরা বিষয়গুলো ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে । এভাবে ছোটছোট বিষয় নিয়ে সারাদিনই চলে তোলপাড় হয় প্রচুর মজা । যেই সন্ধ্যা হল অমনি সবাই যে যার যার কাজে বা ঘরে যায় । যার পড়া আছে সে পড়তে বসে, যার রান্না আছে সে রান্না করে, কেউবা দেখে টিভি । সারাদিন কি হল তা নিয়ে আর কোন কথা না । পরিবার প্রধান বা কর্তা যখন বাসায় আসে তখন তাকে জানানো হয় সারাদিনের সব ঘটনা । তিনি সবাইকে ডাকবেন বুঝাবেন এবং একটি রায় দিবেন । কেউ কোন উচ্চ-বাচ্চ না করে মেনে নিবে । এটাই যৌথ পরিবারের অলিখিত নিয়ম ।
চলবে,,,